২১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫১ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোঃ মিনারুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি/ মোঃ আমিনুল ইসলাম দামুড়হুদা বিশেষ প্রতিনিধি::-
মাত্র ৮৫ হাজার টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় অবুঝ সন্তানকে অথৈ সাগরে ফেলে মরতে বসেছে একজন অসুস্থ মা। মাত্র ৮৫ হাজার টাকা হলেই বাঁচতে পারে একজন মা। একটি মাসুম শিশু ফিরে পেতে পারে তার মাকে।
শুধু বাঁচার জন্য ছোট্ট অবুঝ শিশু খাদিজাকে সাথে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সাহায্য প্রার্থনা করছে অসুস্থ মনোয়ারা বেগম। কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হচ্ছে না বরং রোগের পরিধি ধিরে ধিরে ভয়ংকর থেকে ভয়ংকর আকার ধারন করছে। বলছি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের সবপাড়া পাচগন্ডির ব্রিজ সংলগ্ন গ্রামের অসুস্থ মনোয়ারা বেগমের কথা। মনোয়ার একসাথে ২ টি রোগে আক্রান্ত। তার ইউট্রাসে টিউমার ও কোমড়ের ৩ টা হাড় ক্ষয়ে গেছে। তবে ইউট্রাসে টিউমার রোগটি ভয়ংকর আকার ধারন করেছে। রোগটি স্পর্শকাতর হওয়ায় ডাক্তার আজ থেকে ১১ মাস আগে রংপুরে নিয়ে দ্রুত অপারেশন করতে বলেছেন। নয়তো টিউমার থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে বলে ও জানান। কিন্তু মনোয়ারার পরিবারে নুন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা। স্বামী আলতাফ ফেনিতে রিকসা চালিয়ে কোন রকমে সংসার চালায়। জায়গা বলতে কিছু নেই। ছোট্ট একটি জায়গায় ঝুপড়ি বেধে কোনরকমে থাকে। সেখানে ৮৫ হাজার টাকা যোগাড় করা প্রায় স্বপ্নের মতোই। তাই বাঁচার তাগিদে সকাল হলেই বাচ্চাকে সাথে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘোরা শুরু করে মনোয়ারা। সারাদিন ঘুরে কোনদিন রিক্ত হস্তে কোন দিনবা সামান্য ধান চাল নিয়ে কান্ত হয়ে ঘরে ফিরে আসে অসুস্থ মনোয়ারা। বর্তমানে ইউট্রাসের টিউমার ও কমড়ের হাড় ক্ষয়ের অপারেশন না করায় ও নিয়মিত ঔষুধ খেতে না পারায় পেটের তিব্র ব্যাথায় মনোয়ারা আর স্থির থাকতে পারছেন না। এছাড়া ইউট্রাসের মুখ দিয়ে অনাবরত রস নির্গত হচ্ছে। এছাড়া যখন ব্যাথা ওঠে তার চিৎকারে সেখানকার আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে ওঠে। আর কোমড়ের তিব্র ব্যাথায় মনোয়ারা চেয়ারে বসে ছাড়া নামায আদায় করতে পারে না। মনোয়ারার শিশু খাদিজার এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে সে অঝরে কাঁদতে কাঁদতে বলে আমার মাকে আপনারা বাঁচান। আমার মায়ের অপারেশন করান। আমার মা সারাদিন খালি কাঁদে। আমার মায়ের কান্না আমার সহ্য হয়না। আমার মায়ের অপারেশন করান আমার মাকে বাঁচান আল্লাহ আপনাদের ভালো করবেন। আমার মা মরে গেলে আমি এতিম হয়ে যাবো বাচ্চাটি একটি করুণ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন আমার মা মরে গেলে আমি কেমন করে বাঁচবো?
মনোয়ারার সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন খুব কষ্ট হয়। অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করবার পাইনা। চোখের পানি মুছতে মুছতে খুব কষ্ট করে এ প্রতিবেদককে বলেন বাঁচার আশা ছাড়ি দিচং! এতো কষ্টের চেয়ে মোর মরণ ভালো! কিন্তু ছওয়া বাচ্চা টার জন্য মুই বাঁচপার চাং। মোক তোমরা বাঁচান। মুই সারা জীবন নামাযপড়ি আঁচল বিচি তোমার জন্য দোয়া করিম। প্রতিবেদকের দুটি কথা আমি খবর প্রকাশ করে সমাজের হৃদয়বান বৃত্তবানদের সাহযোগিতার মাধ্যমে কয়েকজন অসহায় অতিদরিদ্র অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু মনোয়ারার মতো এতো করুন পরিণতি কারও দেখিনি। কারন থাকার জায়গা নেই স্বামী থেকেও নেই ২ বেলা ২ মুঠো খেতে পারবেন এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। তবুও অবুঝ সন্তানানের জন্য বাঁচার যুদ্ধ করে যাচ্ছে মনোয়ারা। মনোয়ারার এই বাঁচার যুদ্ধে আসুন আমরা তার সহযাত্রী হই।